আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
টানা আট মাস থেকে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সংঘাত চলছে। এটির শেষ কোথায় সবার অজানা। চলমান এই সংঘাতের মধ্যে নতুন করে আরও একটি যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পথে।
লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে ইসরাইলের একটি বড় ধরনের যুদ্ধ পরিস্থিতির অবস্থা তৈরি হয়েছে। তবে হামাসের সঙ্গে সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি থাকলেও আসন্ন যুদ্ধ ঠেকাতে তৎপরতা শুরু করেছে
তেল আবিবের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউসের একজন বিশেষ দূত জানিয়েছেন, ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে বড় ধরনের যুদ্ধ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে।
মঙ্গলবার লেবানন সফরকালে হোয়াইট হাউসের বিশেষ দূত আমোস হোচস্টেইন বলেন, ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরাইলের সঙ্গে অল্প পরিসরে হামলায় জড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় নতুন করে এক যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র নতুন যুদ্ধ ঠেকাতে কাজ করে যাচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলি হামলার পর থেকেই হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে তেল আবিবে হামলা চালানো হচ্ছে।
গত আট মাস ধরে ইসরাইল ও লেবানন সীমান্তে হামলা চলছে। সবশেষ গত সপ্তাহে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ ইসরাইলে সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্য করে শত শত রকেট ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর একজন কমান্ডার নিহত হয়।
হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ মিত্র লেবানন পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশেষ দূত সাক্ষাত করেছেন। ওই সাক্ষাতে তিনি দ্রুতই এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
নাবিহ বেরির সঙ্গে সাক্ষাতের পর হোচস্টেইন সাংবাদিকদের বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমরা এ অঞ্চলে নতুন উত্তেজনা লক্ষ্য করছি। তাই নতুন করে সৃষ্ট হওয়া এই উত্তেজনা বন্ধে বাইডেন প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।
বাইডেনের এই বিশেষ দূত সোমবার ইসরাইল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাত করে বৈরুতে যান। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন এই বিশেষ দূত হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে চলমান উত্তেজনা নিয়ে সতর্ক করেছে। লেবাননের এই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘাত অব্যাহত রাখলে ইসরাইলে যেকোনো সময় ইরানি হামলা হতে পারে।
হোচস্টেইন বলেন, দীর্ঘ সময় ধরেই ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে সংঘাত চলছে। কূটনৈতিকভাবে দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা উচিত এবং এটি জরুরি।
রোববার থেকে শুরু হওয়া ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইসরাইলে হামলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় হিজবুল্লাহ। আর এ সময়ে লেবাননে সফরে গেলেন বাইডেনের বিশেষ দূত। এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার এ সফর আশা সঞ্চার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সাময়িক সময়ের জন্য হামলা বন্ধ হলেও হিজবুল্লাহ বলছে, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ না হলে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলেও তাদের হামলা বন্ধ হবে না।
সম্প্রতি হিজবুল্লাহ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছরের ৮ অক্টোবর থেকে তারা ইসরাইলে ২ হাজার ১০০ এর বেশি সামরিক অভিযান চালিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান সংঘাতে লেবানন অংশে ৪৭৩ জন নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সদস্য এবং ৯২জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে।
অন্যদিকে ইসরাইল কর্তৃপক্ষ বলছে, হিজবুল্লাহ’র হামলায় তাদের ১৫ জন সৈন্য এবং ১১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।