গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল ও লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যেও পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। তাদের মধ্যে যেকোনো সময় যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন বিশ্লেষকেরাও।
বিজেপিবিরোধী জোট ইন্ডিয়া বুথফেরত জরিপ–সংক্রান্ত বিতর্কে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। যদিও গতকাল শুক্রবার কংগ্রেস জানিয়েছিল, তাঁরা বুথফেরত জরিপ বিতর্কে থাকবে না। কেননা সংবাদমাধ্যমগুলো বুথফেরত জরিপের নাম করে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সংবাদমাধ্যমগুলো নিজেদের প্রচার বাড়ানোর জন্য এসব জরিপ করে থাকে।
ইতোমধ্যে লেবানন ও ইসরায়েল সীমান্ত থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল সাদা ফসফরাস দিয়ে লেবাননের বিভিন্ন গ্রামে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে হিজবুল্লাহ ড্রোন, গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যখন গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তখন গত সপ্তাহ থেকে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল একে ওপরের ওপর হামলার পরিমাণ বাড়িয়েছে। আল জাজিরা বলছে, গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে স্বল্প মাত্রার সংঘাতে লিপ্ত হয়।
দুই পক্ষই বেসামরিক হতাহতের ঘটনা যেন কম ঘটে তেমন চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। তবে পরবর্তী সময়ে ইসরায়েল লেবাননের গভীরে হামলা চালিয়েছে এবং অনেক বেসামরিক লোক এসব হামলায় নিহত হয়েছে।
দুই পক্ষের মধ্যে সামনের দিনগুলোতে আরও বড় ধরনের সংঘাত হতে পারে বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এমনটাই হুমকি দিচ্ছে।
গত ৫ জুন হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি গ্রামে আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়। এতে দুইজন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছে। সেইসময় ইসরায়েলি দমকলকর্মীরা অন্তত ১০০ আগুন নেভানোর কাজ করে। এসব আগুনের সূত্রপাত হিজবুল্লাহর হামলার কারণে হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল লেবাননের সঙ্গে সীমান্তে অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ অভিযানের জন্য প্রস্তুত।
এছাড়া হামলার শিকার কিছু অঞ্চল পরিদর্শনে যান ইসরায়েলের ডানপন্থী নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-জিভির। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটা অগ্রহণযোগ্য যে আমাদের দেশের একটি অঞ্চলকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, অন্যদিকে লেবানন চুপ করে আছে।
‘আমরা হিজবুল্লাহর সকল ফাঁড়ি পুড়িয়ে দিবো এবং তাদের ধ্বংস করব’, বলেন এই মন্ত্রী।
তবে ইসরায়েলের এমন হুঁশিয়ার বার্তার পরেও দুই পক্ষের বড় আকারের যুদ্ধ সহসাই হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন লেবানিজ আমেরিকান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক ইমাদ সালামি।
আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ইসরায়েল একাধিক ফ্রন্টে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। যার মধ্যে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকি এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ও আছে।
নতুন করে আগ্রাসনের ফলে ইসরায়েল আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র নিন্দার মুখোমুখি হতে পারে এবং দেশটির সঙ্গে তাদের প্রধান মিত্র বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকতে পারে।
হিজবুল্লাহর ওপর হামলার জন্য ইসরায়েল সরকারের ওপর অনেকেই দাবি জানাচ্ছেন। ডালিয়া শিইন্ডলিন নামের একজন ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, অনেকেই ভয় পাচ্ছেন যে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি সামরিক পোস্ট ও নাগরিকদের ওপর হামাস যে গত ৭ অক্টোবর হামলা চালিয়েছে এমন হামলা চালাতে পারে।
বৈরুতে কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টার থিঙ্ক ট্যাঙ্কের একজন বিশ্লেষক ও সিনিয়র সম্পাদক মাইকেল ইয়াং বলছেন, হিজবুল্লাহ সম্প্রতি ইসরায়েলের ওপর যে হামলা চালিয়েছে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে এই সতর্ক বার্তা দেওয়া যে তাদের গুরুতর ক্ষতি সাধন করার ক্ষমতা আছে।
তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে দুই পক্ষই আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। মাইকেল ইয়াং আরও বলেছেন, হিজবুল্লাহর বার্তা স্পষ্ট যে যেদিন গাজায় যুদ্ধ বন্ধ হবে সেইদিনে দক্ষিণ লেবাননে লড়াই বন্ধ হবে।